কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: অর্থনৈতিক সংকটের মাঝেই ক্ষোভে ফুঁসছে শ্রীলঙ্কার জনতা। শ্রীলঙ্কার সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। একাধিক মন্ত্রী-সাংসদের বাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বহু দামি গাড়িতেও। মঙ্গলবার পর্যন্ত শাসকদল ও ক্ষুব্ধ জনতার সংঘর্ষে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন ২০০ জনেরও বেশি। বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিনে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো যেন রণমূর্তি ধারণ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোটা দেশেই মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিস। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছেন সেনা জওয়ানরা। এরই মধ্যে বুধবার সকাল পর্যন্ত সারা দেশে কার্ফু জারি করা হয়েছে।
এপ্রিল থেকেই শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট শুরু হয়। বিভিন্ন দেশের কাছে ঋণের দায়ে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা নিজেকে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া ঘোষণা করে। তারপর থেকেই ওই দ্বীপরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের ইস্তফার দাবি জোরদার হয়।
সোমবার বিকেলে মাহিন্দা রাজাপক্ষে ইস্তফা দেন প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে। তবুও রাগ পড়েনি আমজনতার। দেশজুড়ে শুরু হয় মিছিল বিক্ষোভ। প্রধানমন্ত্রী ইস্তফা দেওয়ার পরেই হাজার হাজার বিক্ষোভকারী তাঁর বাসভবনের মূল দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে। বাড়ির ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের ভিতর থেকে অনবরত গুলিবর্ষণ চলে বলে অভিযোগ।
![](https://kolkatatv.org/wp-content/uploads/2022/05/srilanka-1-1.jpg)
সোমবার প্রধানমন্ত্রী রাজাপক্ষে ইস্তফা দেওয়ার পরই অমরকীর্তি আতুকোহালা নামে শাসকদলের এক সাংসদের মৃত্যু হয় গণরোষে। অভিযোগ, গাড়ির ভিতর থেকে ওই সাংসদ উত্তেজিত জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। এরপর জনতা তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পিটিয়ে মারে। এর আগে দফায় দফায় শাসকদলের সমর্থক এবং বিদ্রোহী জনতার মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলে। শাসকদলের আরও এক মন্ত্রী ও প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। মাউন্ট লাফিনিয়ায় দেশের প্রাক্তন মন্ত্রী জনসন ফার্নান্ডোর বাড়িও জ্বলতে দেখা গিয়েছে।
এই দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। মূলত আর্থিক সংকটকে কেন্দ্র করেই প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি সহ গোটা সরকারের ইস্তফার দাবিতে পথে নেমেছে জনতা। তীব্র আর্থিক সংকটের পরিস্থিতিতে গত সাত দিন ধরে বন্ধ কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জ।
![](https://kolkatatv.org/wp-content/uploads/2022/05/srilanka-2.jpg)
ইতিমধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছে। বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদী অন্দোলনের উপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শাসকদল এবং নিরাপত্তাবাহিনী অত্যাচার চালিয়েছে। তার জন্যই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে। এই মুহূর্তে রাজধানী কলম্বো সেনাবাহিনীর কব্জায়।